হাইপোথাইরয়েডিজম কি?কারন,লক্ষণ,প্রতিকার।
হাইপোথাইরয়েডিজম। এটি একটি “থাইরয়েড” হরমোনের ঘাটতিজনিত রোগ। নিশ্চয়ই ভাবছেন খুব মারাত্মক একটি রোগ? অথচ আমরা যদি সামান্য সচেতন হই এবং আমাদের প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় কিছু খাবার যোগ করি তাহলে খুব সহজেই নিজেকে এই রোগ থেকে রক্ষা করতে পারি।
হাইপোথাইরয়েডিজম বর্তমানে অতি দ্রুতহারে বৃদ্ধি পাওয়া একটি রোগ। পুরুষের তুলনায় নারীদের এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি ৬ গুণ বেশি। কিন্তু দেখা যায় এখনও আমাদের মধ্যে অধিকাংশ নারীরই এ রোগ সম্পর্কে ধারণা কম। অনেকেই জানেন না ওষুধ ছাড়াও শুধুমাত্র প্রাকৃতিক উপায়ে এই রোগের মোকাবিলা করা সম্ভব।
আসুন আমরা হাইপোথাইরয়েডিজম সম্পর্কে জেনে নেই-
♦ হাইপোথাইরয়েডিজম
কি?
‘হাইপো’ শব্দের অর্থ কম। যখন কোন কারণে মানুষের থাইরয়েড গ্রন্থি থেকে প্রয়োজনের তুলনায় স্বল্প পরিমানে হরমোন উৎপন্ন হলে তখন তাকে হাইপোথাইরয়েডিজম বলে।
হাইপারপ্যারথাইরয়েডিজম হল প্যারাথাইরয়েড গ্রন্থিগুলির একটি রোগ
যা প্রতি ৮০০ জন মানুষের মধ্যে এক জনের মধ্যে এবং মহিলাদের মধ্যে প্রতি ২৫০ জনের মধ্যে
একজনের মধ্যে পাওয়া যায়। প্যারাথাইরয়েড গ্রন্থিগুলি যেহেতু আমাদের দেহে ক্যালসিয়ামের মাত্রাকে নিয়ন্ত্রণ করে সেহেতু হাইপ্যাপারথাইরয়েডিজম
হ'ল অনিয়ন্ত্রিত ক্যালসিয়ামের প্রভাব। থাইরয়েড গ্রন্থির পিছনে রয়েছে 4 টি প্যারাথাইরয়েড
গ্রন্থি আছে। প্যারাথ্রয়েড গ্রন্থিগুলি প্যারাথাইরয়েড হরমোন (পিটিএইচ)নামক হরমোন দ্বারা আমাদের রক্তে
ক্যালসিয়ামের পরিমাণ নিরীক্ষণ করে এবং নিয়ন্ত্রণ করে।
থাইরয়েড দেখতে একটি প্রজাপতির মত গ্রন্থি যা আমাদের গলায় থাকে। এই গ্রন্থি হতে থাইরক্সিন নামক হরমোন নিসৃত হয়। থাইরক্সিন হরমোন আমাদের দেহের বিভিন্ন বিপাকীয় প্রক্রিয়ায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। পাশাপাশি হৃদপিন্ডের গতি নিয়ন্ত্রণে, শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে, শরীরে কতটুকু প্রোটিন উৎপাদন হবে ইত্যাদি গুরুপুর্ণ কাজে থাইরয়েড হরমোনের প্রভাব রয়েছে।
♦ হাইপোথাইরয়েডিজম এর কারন:
সাধারণ জনসংখ্যার প্রায় তিন শতাংশ হাইপোথাইরয়েড। খাবারে আয়োডিনের স্বল্পতা হাইপোথাইরয়েড হবার একটি বড় কারণ। হাইপোথাইরয়েডিজমে আক্রান্ত হবার বেশকিছু কারণ আছে। ইতিহাস বলে, এবং এখনো অনেক উন্নয়নশীল দেশে, আয়োডিন স্বল্পতাকেই বিশ্বজুড়ে হাইপোথাইরয়েডিজমের সবচেয়ে সাধারণ কারণ। আয়োডিনের স্বল্পতা ছাড়াও হাশিমোতোর থাইরয়েডিটিস বা থাইরয়েড গ্রন্থির এক প্রকার প্রদাহ (ইনফ্ল্যামেশন), অথবা হাইপোথ্যালামাস বা পিটুইটারিগ্রন্থির থেকে নিসৃত থাইরয়েড স্টিম্যুলেটিং হর্মোনের স্বল্পতাও এই রোগের কারণ হতে পারে। গর্ভধারণের সময় দেহের মেটাবলিজম বৃদ্ধির কারণে থাইরয়েড হর্মোনের প্রয়োজন এত বেশি বৃদ্ধি পায় যে সাময়িক ভাবে থাইরয়েড হর্মোন কম পড়তে পারে যা জন্মদানের পর আপনি ঠিক হয়ে যেতে পারে। তবে কারো যদি আগে থেকেই মৃদু হাইপোথাইরয়েডিজম থাকে তাহলে তা আরো প্রকট হয়ে পড়তে পারে।
♦ হাইপোথাইরয়েডিজম এর লক্ষণঃ
হাইপোথাইরয়েডিজম
অনেক ক্ষেত্রেই সঠিক সময়ে ধরা পড়ে না। থাইরয়েড হরমোনজনিত রোগের লক্ষণগুলো এতটাই বৈচিত্র্যময় হয় যে খুব সহজেই তা চিকিৎসকদের সন্দেহকেও এড়িয়ে যায়। তাই কিছু উপসর্গ আছে যা দেখে আপনি নিজেই সন্দেহ করতে পারবেন হয়তো আপনি হাইপোথাইরয়েডিজম এ ভুগছেন এবং চিকিৎসকের শরনাপন্ন হতে পারবেন।
প্রাপ্তবয়স্কদের
মধ্যে হাইপোথাইরয়েডিজমের নিম্নোক্ত লক্ষণগুলো দেখা যায়।
প্রাথমিক লক্ষণ
* ঠাণ্ডা সহ্য করতে না পারা, ঠাণ্ডার প্রতি স্পর্শকাতরতা বৃদ্ধি পায়।
* ওজনবৃদ্ধি, এমনকি কম খেলেও।
* শরীরে আন্তঃকোষীয় কলা বৃদ্ধি ও পানি জমা শুরু।
* ব্রাডিকার্ডিয়া (নাড়ির গতি হ্রাস পাওয়া—স্পন্দন মিনিটে ষাট বারেরও কম হয়)
* ঘামের পরিমাণ হ্রাস পাওয়া
* ত্বকের শুষ্কতা ও চুলকানি প্রবণতা বৃদ্ধি পাওয়া
* পেশিতে হালকা ব্যাথা বা ক্রাম্প - প্রধানতঃ মাসল হাইপোটোনিয়া বা শৈথিল্যের কারণে
* দৈহিক অবসাদ বা অস্বস্তি এবং সারা দেহে এবং অস্থিসন্ধিতে (অর্থাৎ গাঁটে) ব্যাথা
* বিষণ্ণতা বা মানসিক অবসাদগ্রস্থতা যাকে সিউডো-ডিপ্রেশন বলা হয়।
* গলগণ্ড থাকতে পারে, বা নাও থাকতে পারে।
* মলিনতা,কোষ্ঠকাঠিন্য, রজঃস্রাব প্রাথমিক দশায় বৃদ্ধি পেতে পারে।
বিলম্বিত লক্ষণ
* শরীরে আন্তঃকোষীয় কলা বৃদ্ধি ও পানি জমারজন্য এমনকি কার্পাল টানেল সিনড্রোম পর্যন্ত হতে পারে।
* মিক্সিডিমা অর্থাৎ আন্তঃকোষীয় লসিকার মধ্যে শ্লেষ্মার মত (মিক্সয়েড) পদার্থ জমা হয়ে ইডিমা যার উপরে চাপ দিলেও তা সরে গিয়ে পিটিং বা গর্ত তৈরী হতে দেয় না।
* ত্বক শুষ্ক এবং ফুলে যায়, বিশেষ করে মুখস্বরতন্ত্রীর স্ফীতির জন্য স্বর ভেঙে গিয়ে ভারি হয়ে যায়।
* চিন্তাধারার গতি স্লথ হয়ে যায়।
* চোখের ভ্রু চিকন হতে শুরু করে এবং ভ্রর বাইরের অংশ প্রায় মুছে যায় (ম্যাডারোসিস)।
* রজঃচক্র অনিয়মিত হয়ে পড়ে
* শরীর তাপমাত্রা হ্রাস পায়
উপরের কয়েকটি লক্ষণ একসাথে দেখা দিলেই ডাক্তারের শরণাপন্ন হওয়া উচিত এবং কিছু পরীক্ষার মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া উচিত আপনি হাইপোথাইরয়েডিজম এ ভুগছেন কি না।
প্রতিকার:
এই রোগের চিকিৎসায় সাধারণত বিভিন্ন রকমের সিনথেটিক হরমোন পিল দেওয়া হয় যার কিছু ক্ষতিকর পার্শবপ্রতিক্রিয়া থেকেই যায়। তাই এথেকে
মুক্তির জন্যে আমরা আপনাদের একটা ফুড সাপ্লিমেন্টের কথা বলবো যা থাইরয়েড হরমোন এর
ঘাটতি পূরণ করে ব্যালেন্সে নিয়ে আসে।
আর তা হলো -বায়ো স্প্রে প্লাস।
এর উছিলায় ১০০% তারা এই সকল
রোগ থেকে মুক্তি পাব।

0 Comments